ঢাকা, ০৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৫ || ২১ কার্তিক ১৪৩২
good-food
১০৬৬

মিরপুরের ২ কি.মি বিশাল বস্তিতে আগুন

পুড়ে ছাই হলো সহস্রাধিক ঘর  

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:৩৬ ১৬ আগস্ট ২০১৯  

রূপনগরে চলন্তিকা মোড়ের পাশের ঝিলপাড়ের বিশাল বস্তিতে লাগা আগুনে সহস্রাধিক ঘর পুড়ে ছাই হয়েছে। টানা ৪ ঘন্টা চেষ্টার পর আগুনের ভয়াবহতা কমে আসে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে বস্তিটিতে আগুন লাগে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বস্তিটি কমপক্ষে দুই কিলোমিটার লম্বা। এতে হাজার হাজার ঘর ছিল। এর প্রায় সবই পুড়ে ছাই হয়েছে। তবে আগুনে হতাহতের কোনও খবর এখনও ফায়ার সার্ভিস বা অন্য কোনও সূত্র নিশ্চিত করতে পারেনি।

 

আগুন লাগার কারণ এখনও জানাতে পারেনি কোনও সূত্র। তবে কেউ কেউ ধারণা করছেন, বস্তির কোনও ঘর থেকে রান্নার সময় অসাবধানতাবশত আগুন লাগতে পারে। পরে তা দ্রুত পুরো এলাকায় ছড়িয়ে যায়।

তবে স্থানীয়দের কেউ কেউ বলছেন, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। অবশ্য কোনও পক্ষই এসব তথ্য নিশ্চিত করতে পারেনি। আগুন নেভাতে ব্যস্ত থাকায় ফায়ার সার্ভিস এসব বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য দেয়নি।

 

ঘটনার খবর পেয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

 

মিরপুরে বস্তিতে আগুন লাগার খবর শুনে বস্তি ও আশপাশের মানুষ আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। অনেকে ঘরের মালপত্র সরানোর চেষ্টা করেও আগুনের উত্তাপের কারণে পারেননি। পরিবার সদস্যদের নিয়ে বের হতে গিয়ে অনেকেই আহত হন। তাদের অনেককে আশপাশের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান স্বজনরা।

ঘর থেকে  বের হওয়ার সময় অনেককে পড়ে গিয়ে বা আগুনের আঁচে  আহত হয়েছেন।  

এসময় তীব্র ধোঁয়ার সৃষ্টি হওয়ায় অনেকে অসুস্থ হন। বস্তিটির বেশিরভাগ বাসিন্দা পোশাক শ্রমিক বলে জানিয়েছে অনেকে।

 

এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট কাজ করে। তাদের সহযোগিতা করে, পুলিশ ও ওয়াসা।

সন্ধ্যার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায় বস্তির বাসিন্দারা বেশিরভাগই বাইরে ছিল। ঈদের ছুটি থাকায় পোশাক কারখানার কর্মীরাও ছুটি কাটিয়ে এখনও বস্তিতে ফেরেনি।

 

 

বস্তির লোকজন জানান, অগ্নিকাণ্ডের পর বস্তির বেশিরভাগ বাসিন্দারাই বের হয়ে আসতে পেরেছে। ঈদের ছুটির কারণে পোশাক শ্রমিক যারা এখানে ভাড়া থাকেন, তারা এখনও আসেননি। তাই বস্তির ভেতরে আটকা পড়ার আশঙ্কা কম। এখানে সহস্রাধিক ঘর রয়েছে। অন্তত একলাখ মানুষ বসবাস করে। নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস।

 

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের অনেকগুলো গাড়ি এলেও আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ায় ফায়ার সার্ভিসের লোকজন কেবল বাইরের দিকেই পানি দিতে পেরেছে। আগুনের তীব্রতা খুব বেশি ছিল, তাই তারা ভেতরের দিকে ঢুকতে পারেনি। বস্তিটাও বিশাল। অনেকগুলো গলি। আর এরইমধ্যে একবার হালকা বৃষ্টি হয়। তখন মনে হয়েছিল বুঝি বৃষ্টির পানিতে আগুন নিভে যাবে। কিন্তু বৃষ্টি থেমে উত্তর দিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হতে থাকলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায়। ফলে ভেতরের-বাইরের সব ঘরই পুড়ে যায়।

বস্তির সব ঘর বাঁশ-কাঠ-টিন দিয়ে তৈরি। এ কারণে আগুন একটার পর একটা বাড়ি গ্রাস করে। আর উত্তাপ এত বেশি হয়েছিল যে বস্তির মাঝখানে ফায়ার সার্ভিসের মানুষ তো দূরে থাক পানিও দিতে পারেনি।

 

এই বস্তির পাশের একটা মসজিদের ছয়তলা পর্যন্ত আগুন লাগে। মসজিদে আটকে পড়া মানুষদের পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে উদ্ধার করেছে।